বাইক চুরি প্রতিরোধে ২৮টি দুর্দান্ত টিপস

বাইক চুরি প্রতিরোধে ২৮টি দুর্দান্ত টিপস


আপনি কি নতুন বাইক কিনেছেন অথবা আপনার খুব শখে কেনা প্রিয় বাইকটি চুরি হবার ভয়ে ভুগছেন? বাইক চুরি হবার ব্যাপারটা আজকাল অনেক প্রচলিত একটা ব্যাপার। অনেক মানুষই বিভিন্নভাবে তাঁদের প্রিয় বাইক হারিয়ে বোকার মত আফসোস ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি।
কিন্তু, সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করলে আপনার মুল্যবান বাইকটি কোন চোরের খপ্পর হতে রক্ষা করতে পারেন।


আসুন তবে, দেখে নেই বাইক চুরি প্রতিরোধে ২৮টি দুর্দান্ত টিপস -
১। আপনি আপনার বাইকে ডিস্ক লক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই ভালো এবং নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের ডিস্ক লক ব্যবহার করবেন। যদিও অনেক সময় চোরেরা বাইক স্টার্ট করে জোরে টান দিয়ে ডিস্ক লক ভেঙ্গে ফেলতে পারে তাই দেখে শুনে বড় মাপের ডিস্ক লক ব্যবহার করবেন।
২। কোথাও ঘুরতে গেলে ডিস্ক লক ছাড়াও এক্সট্রা টায়ার হোল্ড লক ব্যবহার করতে পারেন। বেশি নির্জন জায়গায় কখনো বাইক ফেলে রাখবেন না অথবা রাস্তার পাশে বাইক রেখে কোথাও যাবেন না।
অনেককেই দেখেছি রাস্তার পাশে বাইক রেখে হয়তো রাস্তা থেকে দূরে কোথাও নিশ্চিন্ত মনে চলে যায়। কিন্তু, একবার ভেবে দেখুন এতে করে চোর নিজের বাইক বলে পরিচয় দিয়ে এমন কি চাবি হারিয়ে গেছে বলে ভ্যান কিংবা যেকোনো ভাবেই আপনার বাইক নিয়ে হাওয়া হয়ে যেতে পারে তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

Click to read >> বাইক হেলমেট কিনবেন কীভাবেঃ কোন সাইজের হেলমেট নির্বাচন করবেন ও এর যত্ন।

৩। আপনি আপনার বাইকে টাচ সেন্সর সমৃদ্ধ আধুনিক সিকিউরিটি এলার্ম ব্যবহার করতে পারেন। এ ধরণের ডিভাইস আপনাকে অনেক উঁচু মানের সুরক্ষা দিতে পারবে।
৪। আপনি যেকোনো বাইক মেরামত অথবা যন্ত্রাংশ বিক্রি করে যেসব দোকান সেগুলো থেকে ভালো মানের ইঞ্জিন কিল সুইচ ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে, আপনি ছাড়া আর কেও চাবি দিয়ে ইঞ্জিন স্টার্ট করতে পারবে না তবে অবশ্যই ছোট সাইজের সুইচ ব্যবহার করবেন এবং এমন জায়গায় সেটা লুকিয়ে রাখুন বাইকের মাঝে যেন কেও বুঝতে না পারে।
৫। কিছু অতিরিক্ত টাকা খরচ করে যদি আপনি একটি জিপিএস ট্র‍্যাকার লাগিয়ে নিতে পারেন তবে এর চাইতে ভালো সুবিধা মনে হয় আর কিছুই হবেনা।
৬। যতটা আড়ালে সম্ভবপর হয় জিপিএস ট্র্যাকার টি লুকিয়ে রাখুন।
৭। সবসময় চেস্টা করুন লোক সমাগম বেশি এরকম জায়গায় আপনার বাইক পার্ক করে রাখার জন্য। কোথাও দীর্ঘক্ষণ কাজ করার থাকলে আশেপাশে কাছে এটিএম বুথ থাকলে কিংবা হাসপাতাল অথবা এমন জায়গা যেখানে সার্বক্ষণিক সিসি-ক্যামেরা সচল আছে এমন জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন।
আপনার অফিসের মাঝে পার্কের জায়গা না থাকলে আশেপাশের দোকানের সামনে অথবা কোন শপিং মলের সামনে পার্ক করে রাখুন এবং আশেপাশে যারা নিরাপত্তার কাজে থাকে তাঁদের কে আপনি কিছু টাকা বকশিশ দিতে পারেন।
এতে করে তারা খুশি হয়ে আপনার বাইকের ওপর নজর রাখবে অথবা আশেপাশের পরিচিত দোকানদারকেও বলে রাখতে পারেন।
৮। ভালো কোম্পানির গ্রিপ লক ব্যবহার করুন। পারলে বাইকের উভয় চাকার সাথেই এক্সট্রা লক ব্যবহার করতে পারেন।
৯। রেস্টুরেন্টের সামনে বাইক রেখে ভেতরে গেলে এমন জায়গায় বসুন যেখান থেকে আপনি আপনার বাইকের প্রতি নজর রাখতে পারবেন।
১০। আপনি বাইকের মাঝে থাকা তেলের লক মানে অয়েল লক এর জন্য ও চাবি বানিয়ে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
১১। আপনি আপনার বাইকটিকে একদম আলাদা ভাবে কাস্টমাইজ করে আলাদা গ্রাফিক্স স্টিকার ব্যবহার করে একটু আকর্ষণীয়তার পাশাপাশি আলাদা রকম লুক এনে দিতে পারেন।
কেন, এই পরামর্শ দিলাম তা জানতে চাইলে বলবো, এর উপকার আমি নিজেই ভোগ করেছি।
আমার পালসার বাইকটি আমি একটু আলাদা ভাবে এয়ার ব্রাশ পেইন্ট জব ও স্টিকার লাগিয়ে ছিলাম যেন সহজেই অনেক পালসার বাইকের মাঝেও আমারটা একটু আলাদা থাকে এবং সহজেই বোঝা যায়।
তাই, মোটর সাইকেল চুরি হবার প্রায় ৮ মাস পর আমি আমার বাইকটি শুধু স্টিকার দেখে চিনতে পারি এবং ফিরে পাই।
১২। বাইকের চাবি দেবার ব্যাপারে সতর্ক হোন। যাকে তাকে ইচ্ছেমত চাবি দিয়ে দিবেন না। এতে করে যে কেও আপনার চাবির ছাপ রেখে নকল করে বাইকটি নিয়ে যেতে পারবে।
১৩। রাতের বেলা কিংবা হাইওয়ে রাইড হলে আপনার সাথে কাওকে রাখুন এবং যে পারদর্শী এতে করে একজন সঙ্গীর পাশাপাশি আপনি অনেক ঝামেলা থেকে সেইফ থাকবেন।
১৪। রাতে বেশি রাইড করতে হলে সবসময় বাইকের মাঝে আলোর ব্যাবস্থা পর্যাপ্ত পরিমান রাখবেন। ভালো কোম্পানির ফগ লাইট ব্যবহারের পাশাপাশি কাস্টমাইজ করা এলিডি লাইট ব্যবহার করতে পারেন।

Click to read >> মোটরসাইকেল চালানোর কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ,নূতনদের জন্য

১৫। রাস্তায় একা রাইডিং এর সময় অপিরিচিত কেও দাঁড়াতে বললে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী না দাঁড়ানোটাই শ্রেয়। কারণ এতে করে আপনি ছিনতাইকারীর কবলে পরতে পারেন। তাই সতর্ক থাকুন।
১৬। রাতের বেলা কখনো অপরিচিত কাওকে ভুল করেও লিফট দিতে যাবেন না।
১৭। বাইকের টায়ারে লিক প্রুফ জেল ব্যবহার করুন এতে করে রাস্তায় যদি ছিনতাইয়ের উদ্দ্যেশ্যে কেও পেরেক রেখে দেয় তবে কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
১৮। দূরের যাত্রা কিংবা সম্ভব হলে সবসময় এবং বিশেষ করে রাতের বেলা রাইডিং এর সময় ফুল ফেস হেলমেটের পাশাপাশি বডি আর্মর পরে বাইক রাইডিং করাটাই ভালো এতে করে কেও আঘাত করলে বাইক নেবার জন্য আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হবার আশংকা অনেকটাই কম থাকবে।
১৯। আপনি জানেন কিনা জানিনা অনেক সময় ছিনতাইকারীরা অনেক ধরণের কৌশল ব্যবহার করে বাইক চুরির জন্য।
রাস্তার মাঝে হুট করে বাইকার কে লক্ষ্য করে কিছু একটা ছুঁড়ে মারে কিংবা গালি দেয় তখন আপনি দাড়িয়ে গেলেই আপনার বাইকটি তারা ছিনিয়ে নিতে পারবে অনেক সহজেই। তাই এমন পরিস্থিতিতে না দাড়িয়ে দ্রুত সরে পড়ুন।
২০। নির্জন জায়গায় আশেপাশে কোন শব্দ কিংবা কোন ধরণের কোন চিৎকার শুনে ভুল করেও দাঁড়াবেন না বিপদ হতেও পারে।
২১। দূর ভ্রমণের সময় সাথে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম্বার সাথেই রাখুন ।
২২। ভালো মানের লুকিং গ্লাস ব্যবহার করুন এতে করে আপনার পেছনে কেও আপনাকে ফলো করলে আপনি ভালো করে সেটা স্পস্ট দেখতে পাবেন।
২৩। হাইওয়ের মাঝে কোন বাসের পিছু পিছু যান। বিপদে পরলে সহায়তা পাবেন।
২৪। রাস্তার মাঝে এক্সিডেন্ট ভেবে দাঁড়াতে যাবেন না কারণ অনেকসময় এরকম ফাঁদ ও ব্যবহার করে হয় ।
২৫। দূরের পথে অবশ্যই চেক করুন পর্যাপ্ত পরিমান তেল ফুরিয়ে নিয়েছেন কিনা আপনার বাইকের মাঝে ।
২৬। খুব প্রয়োজনীয় টুল কিট গুলো আপনার বাইকের টুল বক্স এ রাখুন ।
২৭। অপরিচিত কেও টেস্ট রাইড চাইলে সরাসরি না করুন ।
২৮। ভ্রমণের পথে কোথাও থেমে কিছু খেতে হলে খুব সাবধানে খাবেন।
আজ আর কথা না বাড়িয়ে শুধু এটুকু বলতে চাই, নিজের সাবধানতা নিজের কাছে। তাই যেকোনো প্রকার বিব্রতকর পরিস্থিতির উদয় হবার আগেই নিজেকে রাখুন সুরক্ষিত। প্রয়োজনীয় সেফ গার্ড পোশাক পরে বাইক রাইড করুন।
 মনে রাখবেন, বাইক থেকেও আপনার জীবনের মুল্য বেশি। ছিনতাইয়ের কবলে পরলে বাইকের আশা না করে সেখান থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টাটাই সবার আগে করুন। বিপদে পড়ার সাথে সাথে থানায় জিডি করুন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা যথাযথ ব্যাবস্থা নিন।

নুতন মোটরবাইক কেনার ১0 টি অত্যাবশ্যক টিপস

বাংলাদেশে জনপ্রিয় ১০ টি ১০০ সিসি মোটর বাইক

মোটরসাইকেল ধৌত করার সর্বোত্তম ১০টি টিপস।

===========================================


মোটর বাইক রিভিউ পড়তে পারেন  bike.com.bd সাথে জেনে নিন মোটর বাইকের দাম

মোটরবাইক লাইসেন্স এবং মোটরসাইকেল নিবন্ধন ফি পুনঃনির্ধারণ

মোটর সাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে করবেন? 

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার উপায়

ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত পরীক্ষার স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্ন ব্যাংক ও উত্তর

মোটর বাইকিং And ড্রাইভিং A টু Z [পর্ব-০১] :: সূচনা, বিভিন্ন মটরসাইকেল, কেনার সময় লক্ষণীয় ও বাইক ইঞ্জিন


Comments