বাইক রাইড করার সময় শরীরের ক্ষতি করছেন না তো?
সবাইকে প্রথমেই জানাই শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই সুস্থ আছেন এবং নিয়মিত বাইক রাইডিং এবং বাইক চালনা সম্পর্কে আমাদের মুল্যবান আলোচনা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ছেন এবং পালন করছেন।
আমরা সব সময়ই আপনাদের প্রতিদিনের পথচলার জন্য উপকারী বিভিন্ন বিষয়বস্তু আলোচনার চেস্টা করে থাকি এবং নিত্য নতুন সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদের সহায়তায় সেগুলো তুলে ধরি।
বাইক হেলমেট কিনবেন কীভাবেঃ কোন সাইজের হেলমেট নির্বাচন করবেন ও এর যত্ন। বাইক চালকদের জন্য এক্সপার্টদের ১০ টি নিরাপত্তা টিপস বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালানোর নিয়ম কানুন কিভাবে হবেন একজন দক্ষ মোটর বাইক চালক কিভাবে আপনার বাইকটিকে আরও দ্রুততর করে তুলবেন মোটর সাইকেল চালানো শুরুর আগে বাইকের প্রি রাইড চেক করুন মোটর বাইক চালানোর সময় আপনার কি কি পরিধান করা উচিৎ নুতন মোটরবাইক কেনার ১0 টি অত্যাবশ্যক টিপস মোটর বাইক কেনার পরামর্শ বা নির্দেশিকা মোটরসাইকেল নির্বাচন করবেন কীভাবে: নতুন চালকদের মোটরসাইকেল নির্বাচন
তারই ,ধারাবাহিকতায় আজ আমরা বাইক চালনার সময় আমাদের শরীরের প্রতি যে সমস্ত বিষয় খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
প্রায় নিয়মিতই আমরা সবাই বাইক চালনা করি। কিন্তু কখনই কি ভেবে দেখেছেন যে এই বাইক চালনার সময় আপনার শরীরের উপর এর প্রভাব কতটা পরছে কিংবা কি ধরণের অনুভূতি অনুভব করছেন? কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা।
মনে হয়না এসব নিয়ে আপনাদের কখনো মাথা ব্যাথা হয়েছে। অনেকেই বাইক কেনার সময় ও নিজের শারীরিক ক্ষমতা নিয়ে বিড়ম্বনায় পরেন কোন বাইক শরীরের সাথে মানাবে বা নিজে মানিয়ে নিতে পারবে এসব ভেবে।
আবার অনেক কথাই থেকে যায় আড়ালে, চলুন তবে আলোচনায় দেখি আজকের বিষয়বস্তু গুলোঃ
বাইক রাইড করার সময় শারীরিক যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা উচিৎ
১। পরিপাকতন্ত্রকোলন সমস্যাঃ
লজ্জাজনক কথা হলেও বলি, অনেকেই টয়লেটের চাপ নিয়েই মাঝে মাঝে বেরিয়ে পরে বন্ধু কিংবা কাজের জন্য। আপনি হয়তো নিজেকে সুপারম্যান ভেবে চাপ সহ্য করতে পারেন ভেবে ঘুরে ফিরে অনেক পরে কাজটা শেষ করলেন ।
কিন্তু, মনে রাখবেন, এরকম কাজের জন্য আপনার সুপারম্যান নামটি চিরতরে মুছে যেতে পারে। রাস্তায় যদি এমন সময় পেটে জোরে চাপ লাগে তবে তা সরাসরি পরিপাকতন্ত্র কিংবা পায়ুপথের আশেপাশে চাপ সৃষ্টি করে।
যার দরুন ভেতরে মলনালী ফেটে ইনফেকশন সহ পাইলস এবং মারাত্মক কিছুও হয়ে যেতে পারে। তাই, সাবধান হউন এমন ভুল অভ্যাস গুলো আজ থেকেই ত্যাগ করুন না হলে আপনিই হাড়ে হাড়ে এর কষ্ট টের পাবেন।
২। মূত্রনালিতে ইনফেকশন সমস্যাঃ
অনেকেই পথের মাঝে দেখা যায় প্রস্রাব আটকে বাইক চালায়। অথচ এটা বোঝেনা পথের মাঝে এই কাজটা সেরে নেয়া মাত্র পাঁচ মিনিটের একটা ব্যাপার মাত্র। তারপরেও জোর করে বাইক চালিয়ে যেতে থাকে। এতে করে মুত্রনালির ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা একদম শতভাগ।
তাই, নিজে বাঁচতে চাইলে সুস্থ জীবন উপভোগ করতে চাইলে এসব বাজে অভ্যাস ত্যাগ করে নিজকে রাখুন সুস্থ ।
৩। মেরুদন্ড / ব্যাক পেইনঃ
আজকালের অনেক ছেলেই দেখি খুব স্টাইল করে আঁকাবাঁকা হয়ে আবার অনেক মানুষ দেখি খুব টান টান হয়ে কোমর ঘাড় টান দিয়ে ধরে রেখে বাইক চালাতে। কিন্তু একবার কি ভেবে দেখেছেন এ ধরণের স্টাইল আপনার শরীরের উপর কি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
আপনার মনে রাখা উচিত, বাইকের মত আপনি কোন যন্ত্র না, আপনি মানুষ। এরকম ভাবে বাইক রাইড করার ফলে সামনের দিকের সবটুকু ঝাঁকি যায় মেরুদন্ডের উপর দিয়ে আর পেছনের চাকায় ঝাঁকি লাগে তবে ঝাঁকি নিতম্ব হয়ে সোজা মেরুদণ্ডে আঘাত করে।
তাই, যথাসম্ভব নিজেকে ফ্লেক্সিবল ভাবে বাইকের সাথে মানিয়ে নিতে চেস্টা করুন এতে করে লাভটা আপনারই হবে আর পেছনে আপনার বন্ধু কিংবা যে কেউ উঠুক না কেন আপনি তাকে বলুন যেন অনেক ইজি এবং রিলাক্সেবল ভাবে বসে এবং আপনার বাইকের থার্ড পার্টস এর মাঝে ভালো করে ধরে বসে।
যদি সেভাবে না বসতে পারে তবে বলুন যেন সোজা হয়ে কনুইর মাঝে ভর দিয়ে বসতে। এতে করে আপনার ও সুবিধা হবে পেছনে থাকা মানুষটির মেরদন্ডখানাও অক্ষত থাকবে।
মনে রাখবেন, আপনার মেরুদন্ড গেল মানে আপনি একটা জীবন্ত পুতুল ছাড়া আর কিছুই না, তাই এই ব্যাপারে খুব সাবধান থাকুন।
৪। প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এ আঘাত বা চাপ রক্ষা করাঃ
বাইকার ছেলে মেয়ে যে কেও হতে পারে। কিন্তু ভাই ছেলে বাইকারদের বলছি লজ্জা নিয়ে ঘরে বসে থাইকেন না। একটু চোখ মেলে এবারের ব্যাপারটা দেখুন কারণ যেটার কথা বলছি সেটা আপনার অমুল্য সম্পদ তাই বাঁচিয়ে রাখার চেস্টা করুন।
কখনই টাইট আন্ডার গারমেন্ট কিংবা জিন্স পরে বাইক রাইড করবেন না। এতে করে অনেক বড় ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে।
তাছাড়া আপনি কোন মেডিকেল পরামর্শ ঘেটে দেখতে পারেন, সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে যে টাইট জিন্স কিংবা আন্ডার গারমেন্ট আপনার স্পার্ম দিন দিন কমিয়ে ফেলে। তাই এ ব্যাপারে এখনি সতর্ক হউন ।
৫। চোখের যত্ন নেয়াঃ
আমরা অনেকেই আছি যে বাইক চালনার সময় হেলমেট ব্যবহার করি। কিন্তু সমস্যা একটাই একটু স্টাইল করেই হউক কিংবা যেকোন কারণ বশত সামনের হেডশেডটা ফেলে রাখিনা আবার অনেকে হেলমেট তো দূরের কথা গ্লাস ও ব্যবহার করেনা।
এর ফল দাড়ায় অনেকেরই চোখে পোকা মাকড় পরে হুট করে চোখ বন্ধ হয়ে যাবার ফলে রাস্তায় এক্সিডেন্ট করে বসে।
আবার অনেকের চোখে খচ খচ করে সবসময় আবার ফুলে যায় কিংবা পানি ঝরে। হয়তো সামান্য পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলি তেমন একটা পাত্তা দেইনা এসব ব্যাপার ।
একবার ভেবে দেখেন আপনি অনেক সময় সামান্য হাঁটা কিংবা দৌড়ের ফলে চোখ থেকে পানি ঝরে আবার অসহ্য লাগে অনেক সময় আর এখানে আপনার বাইকের গতি থাকে ৭০ থেকে ১০০ এতো স্পীড এ এতো অল্প সময়ের মাঝে আপনার চোখের মাঝে কি পরিমান ডাস্ট যাচ্ছে আর আপনি এটা পাত্তা না দিয়েই সামান্য পানি দিয়ে সাময়িক আরাম নিয়ে সব ভুলে যাচ্ছেন।
কিন্তু একবার ভেবে দেখুন যে সমস্যাটা পরবর্তীতে কি হতে পারে আপনি অন্ধত্ব বরণ করতে পারেন তা কি একবার ভেবে দেখেছেন? অস্বস্থি বোধ হলেও একটু শেড টা নামিয়ে কিংবা গ্লাস, গগলস পরে বাইক চালানোর নিয়মিত অভ্যাস করুন ।
আশা করি, উপরের কথা গুলোর সাথে আপনিও একমত হবেন। তাই নিজের স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে ভালো মত বাঁচার জন্য একটু সাবধানতা আর সামান্য অভ্যাস গড়ে তুলুন এখনি। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন আবার অন্য কোন এরকম ব্যাপার নিয়ে আলোচনা থাকবে তার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।
Comments
Post a Comment