বাইক হেলমেট কিনবেন কীভাবেঃ কোন সাইজের হেলমেট নির্বাচন করবেন ও এর যত্ন।
একটি হেলমেট ছাড়া আপনি কেন বাইক চালাবেন? হেলমেট এর দাম কম হোক বেশী হোক আপানার নিজেকে বাঁচাতে হলে হেলমেটের দাম এর দিকে না তাকিয়ে অবশ্যই কিনবেন। সুতরাং, হেলমেট বাইক চালকদের জন্য গুরুত্তপুর্ণ ভুমিকা পালন করে এবং কিছু দেশে এর জন্য প্রয়োজনীয় আইন রয়েছে।
আর ও পড়তে পারেন >>
মোটর বাইক চালানোর সময় আপনার কি কি পরিধান করা উচিৎ
হেলমেট এর প্রকারভেদঃ
বাইক হেলমেট ৩টি মৌলিক রকমের।
১। সাধারন হেলমেট ২। রোড-বাইক হেলমেট ৩। মাউন্টেন-বাইক হেলমেট
সকল ধরনের হেলমেট আরামদায়ক ও যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা থেকে মাথা রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়।
সাধারন হেলমেটঃ বিনোদন, কমিউটার, রোড এবং মাউন্টেন রাইডারদের জন্য একটি লাভজনক হেলমেট। এই হেলমেট স্কেটারস ও স্কেট বোর্ড খেলোয়ারদের জনপ্রিয়। সুর্য থেকে চোখ রক্ষা করার জন্য এই হেলমেট এ ভিসরস যুক্ত করা থাকে।
রোড-বাইক হেলমেটঃ এই ধরনের হেলমেট ওজনে হালকা, স্বাভাবিক বায়ু চলাচল এবং অতি মনোরঞ্জিত নকশাকৃত। এতে ভিসরস বসানো থাকে, যা হেল্মেট এর ওজন কমিয়ে রাখে।
মাউন্টেন-বাইক হেলমেটঃ (প্রায় সাইক্লোক্রস রাইডার্স দ্বারা ব্যবহৃত হয়) কম গতিতে ভাল মুক্ত বায়ু সেবনের জন্য এই ধরনের হেলমেট ডিজাইন করা হয়ে থাকে। এটি ভিসরস দ্বারা পৃথক, পিছনের দিকের মাথা রক্ষা করার জন্য রয়েছে উন্নত শক্তিশালী ডিজাইন।
মাউন্টেন অতিক্রম করার জন্য এই ধরনের হেলমেট নিরাপদ। এগুলোর কিছু ডিজাইন পুরো মুখমন্ডল সুরক্ষার জন্য, যা পার্ক রাইডার্স ও মাউন্টেন রাইডার্সদের বৈশিষ্ট্য।
হেলমেট এর দাম
হেলমেট এর দাম উথানামা করে সাইজ, ব্রান্ড,ফিছার এর কারণে। বংশাল বা নিউ ইস্কাটন রোডে, তেজগাঁ রোডে, হেলমেটের দাম ১১০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যেই পাবেন, আর গ্লাস পাবেন ৩৫০ থেকে ৮৫০ টাকার মধ্যে । আবার হেলমেট এর দাম নির্ভর করে অনেক সময় ব্রান্ড অনুযায়ী।
কিছু হেলমেট ব্রান্ড
Aron Steelbird Crazy Studos Vega ইত্যাদি
বাইক চালানোর নিয়ম >>
মোটরসাইকেল চালানোর কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ,নূতনদের জন্য
মটর সাইকেল এর দাম ২০১৬:
ইয়ামাহা মোটর সাইকেল এর দাম ২০১৬
হিরো মটরসাইকেলের দাম ২০১৬
বাইক হেলমেট বাছাই করনের কিছু দিকনির্দেশনা আপনাদের দেওয়া হল। আশাকরি তা আপনাদের কাজে লাগবে।
বাইক এর বৈশিষ্ট্যঃ যা দেখে হেলমেট কিনবেন
বায়ু চলাচলঃ হেলমেট এর ছিদ্র গুলি দ্বারা মাথার উপর বায়ু চলাচল করে। যা মাথা ঠান্ডা রাখে এবং আরামদায়ক বাইক চালাতে সাহায্য করে। যত ছিদ্র বেশি, তত বেশি হালকা হেলমেট।
ভিসরস বা মুখোশঃ কিছু রাইডার সুর্যের আলো প্রতিরোধক মুখোশ হেলমেট এ সংযুক্ত করে থাকে। এটা মাউন্টেন বাইকারদের জন্য সাধারন ব্যাপার। একটি ভিসরস যেমনি হোক না কেন, খুবই সামান্য ওজন এবং সামনের বাতাসের চাপ কমিয়ে রাখে।
ফুল ফেস প্রোটেকশনঃ মাউন্টেন রাইডারদের হেলমেট এ চারপাশ মুড়ানো একটি চিবুক বার রয়েছে, যা মাউন্টেন ও পার্ক রাইডারদের মুখমন্ডল নিরাপত্তা প্রদান করে।
স্ট্র্যাপঃ স্ট্র্যাপ সিস্টেম আরামদায়ক এবং আটকানো ও খুলতে সহজ।
হেয়ারপোর্টঃ কিছু কিছু হেলমেট এ লম্বা চুলের জন্য পিছনের দিকে ছিদ্র রয়েছে। যাকে হেয়ারপোর্ট হলা হয়ে থাকে।
হেলমেটের ওজন ও দীর্ঘস্থায়িত্ব : হেলমেট হতে হবে হালকা এবং মজবুত।
গ্লাসের মান : গ্লাসের মান অবশ্যই ভালো হতে হবে, স্ক্যাচ রেজিস্ট্যান্স হলে ভালো হয়, তাহলে সহজে দাগ পড়বে না ।
হেলমেট ও গ্লাসের রংঃগরম কালের জন্য সাদা এবং শীতকালের জন্য কালো রং এর হেলমেট কিনতে পারেন।
গ্লাস নির্বাচন করার সময় হালকা কালো বা ওয়াটার কালার গ্লাস নিতে পারেন, তবে, একটা বিষয়ই মাথাতে রাখবেন তা হল বেশি কালো গ্লাস বা মারকারি গ্লাস পরিহার করুন কারন, মারকারি গ্লাস গুলো দিয়ে রাতের বেলা বাইক চালাতে পারবেন না ।
বাইক হেলমেট তৈরিঃ
বেশিরভাগ হেলমেটই ছাঁচ-ঢালাই এর কাজ করা থাকে। বাহিরের দিকে শেল ব্যবহার করা একটি জনপ্রিয় প্রক্রিয়া। এগুলো আঠা ব্যবহার না করেই ভিতরের দিকে ডিজাইন করা হয়ে থাকে। এতে হেলমেট হয় অনেক হালকা এবং শক্তিশালী ডিজাইন।
যদিও হেলমেট এর ওজন অনিয়মিত বাইক চালকদের জন্য উদ্বেগের বিষয় নয়। রেসার ও ঘন রাইডার্সরা একটি লাইটার হেলমেটকে ওজন সাশ্রয়ী হিসেবে প্রসংশা করে থাকে।
শেলঃ সর্বাধিক সাইক্লিং হেলমেট একটি প্ল্যাস্টিক শেল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় যা দুর্ঘটনার সময়ও আটকে থাকে। হেলমেটকে যেকোন দিকে ঘুরানো এবং অতিরিক্ত ধাক্কায়ও এটি নিরাপত্তা প্রদান করে (আপনার মাথা ও ঘাড় রক্ষা করার জন্য)।
লাইনারঃ বেশিরভাগ হেলমেট এ লাইনার দ্বারা প্রস্তুত প্রসারিত পলিস্ট্রেইন ফোম থাকে। এর প্রভাব, লাইনার এর পলিস্ট্রেইন ফোম আপনার মাথা রক্ষা করার জন্য বল প্রয়োগ করবে। পরীক্ষা করে নিন, লাইনার আপনার মাথায় সঠিকভাবে স্থাপন হয়েছে কিনা।
এমআইপিএএস প্রযুক্তিঃ
কিছু হেলমেট এর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামুলক নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে এমআইপিএএস প্রযুক্তি। হেলমেট প্রস্তুত করনের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য বাইক দুর্ঘটনার সময় সঠিক নিরাপত্তা প্রদান করা। এমআইপিএস এর ডিজাইন করা হেলমেট এ লো-ফ্রিকশন লেয়ার এর প্রভাব, স্লাইড এ ঘুরানোর জন্য লাইনার ব্যবহৃত হয়। এটি কয়েক মিমি. স্লাইডে ঘুরানো যায়।
কিন্তু, এটি নির্দিষ্ট ঘুর্ণঞ্জনিত প্রভাব দূর করে, যা আপনার ব্রেইন এর ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
মোটর সাইকেল হেলমেটঃ কিভাবে বাছাই করবেন
সঠিক হেলমেট এর সাইজ নির্ধারনঃ
যখন হেলমেট বাছাই করবেন, তখন এটি ভাল হওয়া অত্যাবশ্যক। সর্বাধিক হেলমেট ছোট, মাঝারি এবং বড় বা বর্ধিত মাপের তৈরি হয়ে থাকে।
আপনার প্রয়োজনীয় আকার খুজে পেতে, একটি ফ্ল্যাক্সিবল ট্যাপ দ্বারা আপনার মাথার সর্ববৃহৎ অংশ পরিমাপ করুন। অথবা সজা দুই প্রান্ত বিশিষ্ট মাপকাঠি দিয়ে দৈর্ঘ্য পরিমাপ করুন।
আপনার সাইজ অনুযায়ী হেলমেট খুজে বের করতে rel.com এই ওয়েবসাইটে “Speces” পৃষ্ঠায় হেলমেট এর আকার-পরিমাপ এর বিশদ বিবরন দেওয়া হয়েছে।
আপনার মাথার সাইজ অনুযায়ী হেলমেট এর সাইজ নির্ধারণ করুন
- অতিরিক্ত ছোটঃ 20″ এর ছোট (51 সেমি.)
- ছোটঃ 20″- 21.75″ (51 সেমি. – 55 সেমি.)
- মধ্যমঃ 75″ – 23.25″ (55 সেমি. – 59 সেমি.)
- বড়ঃ 25″ – 24.75″ (59 সেমি.- 6 সেমি.)
- অতিরিক্ত বড়ঃ 75″ (63 সেমি.) থেকে বড়
- এক সাইজ ফিট (পুরুষ)ঃ 75″-24″ (54 সেমি. -61 সেমি.)
- এক সাইজ ফিট (মহিলা)ঃ 75″-22.5″ (50 সেমি. -57 সেমি.)
- এক্সাইজ ফিট (বাচ্চা)ঃ 18″-22.5″ (46 সেমি. -57 সেমি.)
বাইক হেলমেট পরিধানঃ
একটি ভাল সাইজের হেলমেট অবশ্যই ভাল হওয়া উচিত। এটি আপনার মাথার উপর সিট এর মত সাম্নের প্রান্ত এর সঙ্গে বসে থাকবে অথবা আপনার ভ্রু এর উপর থেকে পরিধান করতে হবে যেন কপাল সুরক্ষিত থাকে।
হেলমেটটি সামনে পিছনে ঘুরিয়ে সঠিক ভাবে আপনার মাথার উপর বসাতে হবে। লক্ষনীয় যে, যদি এটি ১ ইঞ্চি এর বেশি নাড়াচাড়া করে, সেক্ষেত্রে হেলমেট এর সাইজ ফিট ঠিক করতে হবে।
ফিট করার ক্ষেত্রে, আপনার মাথার হেলমেট বসানোর পুর্বে হেলমেট এর সাইজ ঠিক করে নিন। প্রায় সকল হেলমেট এর ভিতর ফিট সাইজ ঠিক করার জন্য সাইজিং রিং লাগানো থাকে। হেলমেট সঠিক ভাবে বসানো হলে সাইজিং রিং ঘুরিয়ে প্রয়োজনীয় ফিট এ আটকাবেন।
পরবর্তীতে, স্ট্র্যাপ ভালোভাবে আটকাতে হবে। স্ট্র্যাপ টি V আকারে আটকাতে হবে এবং কান উন্মুক্ত থাকবে। স্ট্র্যাপ উভয় কানের পাশ দিয়ে আরামদায়ক ফিট এ আটকাবেন।
সবশেষে, চেইন স্ট্র্যাপ আপনার মুখ নাড়াচাড়া করার সুবিধার জন্য লাগানো থাকে। এটি মাথার উপরের অংশে জোড়ালো ভাবে আটকাতে হবে। আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ফিট তৈরি করুন। মনে রাখবেন, বেশি অতিরিক্ত টাইট ফিট আপনার জন্যে আরামদায়ক নয়।
বাইক হেলমেট পরিচর্যাঃ
রসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে কখনো হেলমেট পরিস্কার করবেন না। নির্মাতারা শুধুমাত্র নরম কাপড় বা স্পঞ্জ, হালকা সাবান ও পানি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিস্কার করার জন্য বলে থাকেন।
চিলেকোঠা, গ্যারেজ, ট্রাঙ্ক অথবা অন্য কোন ও জায়গা যেখানে তাপ সঞ্চয় করে রাখতে পারে সেখানে কখনো হেলমেট রাখবেন না। অতিরিক্ত তাপ আপনার হেলমেট এর উপর বুদবুদ এর মত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া হেলমেট পরিধান করবেন না।
অন্যদেরকে আপনার হেলমেট পরিধান করাবেন না।
কখন হেলমেট পরিবর্তন করবেন ?
একটি হেলমেট দুর্ঘটনাজনিত কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। যে জায়গায় ক্ষতিগ্রস্থ, সেটি ঠিক করুন এবং এটি যেন নতুনের মত থাকে।
এছাড়াও, প্রতি ৫ বছর পর পর হেলমেট পরিবর্তন করুন। দূষণ, UV রশ্মি ও আবহাওয়া জনিত কারনে হেলমেট এর উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
মাথার সাথে মিলিয়ে একুরেট সাইজের হেলমেট কিনুন এবং মৃত্যু কিম্বা এক্সিডেন্ট প্রতিহত করা যায় কেবলমাত্র একটি ভালোমানের বাইক হেলমেট পরিধান করে।
আর ও পড়তে পারেন >>
বাইকের সাথে কি কি এক্সেসরিজ প্রয়োজন?
মটর সাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স:
Comments
Post a Comment